আল্লাহর অনুগ্রহ ও করুনা সম্পর্কেঃ
৫৮. রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেন- মহান ও প্রতাপশালী আল্লাহ্ বলেন, “আমার ক্রোধের উপর আমার অনুগ্রহ বিজয় লাভ করেছে।”
৫৯. রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেন- তোমাদের মহান ও পরাক্রান্ত প্রতিপালক বলেছেন, “একটি ভাল কাজ করলে দশটি পূন্য লেখা হয় আর একটি খারাপ কাজের জন্য একটি পাপ লেখা হয়, অথবা আমি তা মাফ করে দেই। আর যে লোক পৃথিবী পরিমাণ পাপ নিয়ে আমার সাথে দেখা করে তাকে আমি পৃথিবী পরিমাণ ক্ষমা নিয়ে দেখা দেই। আর যে লোক একটি পূর্ণ কর্ম করার সংকল্প করে, কিন্তু তখনও তা সম্পন্ন করেনি, আমি তার জন্য একটি সওয়াব লিখি। আর যে লোক আমার দিকে এক বিঘত অগ্রসর হয়, আমি তার দিকে এক হাত অগ্রসর হই, আর আমার দিকে যে এক হাত অগ্রসর হয়, আমি তার দিকে এক গজ এগিয়ে আসি।”
৬০ . রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেন- সুমহান আল্লাহ্ বলেছেন, “ও হে মূসা! তুমি অনুগ্রহ কর, তোমার প্রতি অনুগ্রহ করা হবে।”
৬১. রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেন- মহান আল্লাহ্ বলেছেন, “আমার বান্দা যখন কোন একটি পূণ্যে কাজের মনস্থ করে, কিন্তু তখনও সে তা সম্পন্ন করেনি, আমি তার জন্য একটি পূণ্য লিখে দেই। আর সে যদি তা সম্পন্ন করে তবে আমি দশ থেকে সাত’শ গুণ পর্যন্ত পূণ্য লিখে থাকি। আর সে যখন কোন পাপ কাজের মনস্থ করে, কিন্ত তখনও তা সম্পন্ন করে তবে আমি তাতে একটি মাত্র পাপ লিখি।”
৬২. রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেন- সুমহান আল্লাহ্ হযরত দাউদ (আ) -এর প্রতি প্রত্যাদেশ পাঠালেন, “আমার ইয্যত ও জালালের কসম! আমার এরূপ কোন বান্দা নেই, সে আমার সৃষ্টজীবকে ছেড়ে আমায় আঁকড়ে ধরে আমার আশ্রয় অবলম্বন করে, বরং আমি তার নিয়তের দ্বারা তা জানতে পারি, তখন আকাশসমূহ ও তাতে যা কিছু রয়েছে এবং পৃথিবী ও তাতে যা কিছু রয়েছে সবাই মিলে তাকে প্রতারণার জালে আটকিয়ে ফেলে। কিন্তু এর মধ্য থেকে আমি তার পরিত্রাণের পথ প্রশস্ত করে দেই। আর এরূপ কোন বান্দা নেই যে, সে আমাকে ত্যাগ করে কোন সৃষ্টির আশ্রয় নেয়, আমি তার নিয়ত অভিপ্রায় দ্বারা তা জানতে পারি, বরং আসমানের সমস্ত পন্থা তার সামনে কেটে ফেলি। আর তার বাসনাকে তার পায়ের তলে দৃঢ়ভাবে বেধে রাখি। আর এরূপ কোন বান্দা নেই, যে আমার আদেশের আগেই তাকে অনুগত করা না হয়। চাওয়ার আগে আমি তাকে দান করি। আর আমার কাছে মাফ চাওয়ার আগেই আমি তাকে মার্জনা করে দেই।”
৬৩. রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেন- আল্লাহ্ যখন সৃষ্টিকে সৃষ্টির মনস্থ করলেন তখন তিনি আরশের উপর রতি তাঁর গ্রন্থে লিখলেন, “নিশ্চয়ই আমার করুণা আমার রোষের উপর প্রভাবশালী।”
৬৪. রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেন- কোন এক বান্দা মহান ও পরাক্রান্ত আল্লাহর সন্তুষ্টি তালাশ করতে থাকে। অতঃপর সে তা থেকে বিচ্যুত হয় না। তখন মহান ও পরাক্রান্ত আল্লাহ্ বলেন, “হে জিবরাঈ’ল! আমার অমুক বান্দা আমাকে খুশি করতে চেয়েছে। (তুমি জেনে রাখ) নিশ্চয় তার প্রতি আমার অনুগ্রহ রয়েছে”। তখন সেই ঘোষণা আরশ বহনকারীগণ এবং তাদের পার্শ্ববর্তী ফেরেশতাগণ পুনঃ পুনঃ বলতে থাকে, এমন কি সপ্তম আকাশের অধিবাসীরাও এ কথাগুলি বলতে থাকে। এরপর সে (জিবরাঈ’ল) দুনিয়ায় নেমে আসে।”
৬৫. রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেন- কেয়ামতের দিন মহান ও প্রতাপশালী আল্লাহ্ বান্দাকে জিজ্ঞেসকরবেন এবং বলবেন, “তুমি যখন অসৎকর্ম সংঘটিত হতে দেখেছিলে তখন তাতে বাধা দাওনি কেন?” রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেন, এর প্রতুত্তর আল্লাহ্ বান্দার মনে উদিত করে দেবেন। সে বলবে, “হে আমার রব! আমি মানুষদেরকে ভয় করেছিলাম এবং তোমার করুনার আশা পোষণ করেছিলাম।”
৬৬. রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেন- সৃষ্টিকে যখন সুমহান আল্লাহ্ সৃষ্টি করলেন, তখন তিনি নিজ হাতে তার নিজের জন্য অপরিহার্য দায়িত্বরূপে লিখে নিলেন, “নিশ্চয়ই আমার করুণা আমার রোষের উপর প্রভাব বিস্তার করবে।”
৬৭. রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেন- মহান ও পরাক্রান্ত আল্লাহ বলেন, “তোমরা যদি আমার করুনা কর, তবে আমার মাখলুকের প্রতি অনুগ্রহকর।”
৬৮. রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেন- মহান ও পরাক্রান্ত আল্লাহ্ বলেন, “উদারতায় আমার চেয়ে বড় আর কে হতে পারে? আমি বান্দাদেরকে তাদের বিছানায় রক্ষণাবেক্ষণ করি, তারা যেন আমার অবাধ্য হয়নি। আর এটা আমার অনুকম্পা যে, আমি তওবাকারীর তওবা কবূল করি, যেন সে সর্বদা তওবাকারী ছিল। এমন কে আছে, যে আমার কাছে প্রার্থনা করেছে অথচ আমি তাকে তা দেইনি? আমি কি কৃপন যে, আমার বান্দা কৃপণতার জন্য আমাকে দোষারোপ করবে”?